Home » Domain » যেভাবে জয় করলো ডট .বাংলা (dot bangla domain)

যেভাবে জয় করলো ডট .বাংলা (dot bangla domain)

ইন্টারনেটে এই ডট বাংলার জন্য লড়াই করতে হয়েছে দীর্ঘদিন । ওয়েব ব্রাউজারের অ্যাড্রেস বারে লেখা ইউআরএল বা ইউনিফর্ম রিসোর্স লোকেটর বাংলায় লেখার অধিকার পেতে অর্ধযুগেরও বেশি সময়ের অপেক্ষা করতে হয়।

দীর্ঘ সময় সংগ্রামের পর চলতি বছরে অপেক্ষাটা ছিল আন্তর্জাতিক ডোমেইন ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রক সংস্থা ইন্টারনেট করপোরেশন ফর অ্যাসাইন্ড নেইমস অ্যান্ড নাম্বারস (আইক্যান)আইক্যান হতে অনুমোদন। কান্ট্রি কোড টপ-লেভেল এই ডোমেইন হিসেবে বাংলাদেশের জন্য ডট .বাংলার বরাদ্দ থাকলেও ডোমেইন ম্যানেজার হিসেবে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানি লিমিটেডকে (বিটিসিএল) অনুমোদন দেয়া হচ্ছিল না।

বছরের শুরুতেই ৬ জানুয়ারি ২০১৬ সচিবালয়ে সরকারের দুই বছরে টেলিযোগাযোগ বিভাগের অর্জন ও ভবিষৎত পরিকল্পনা নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম জানান, মাতৃভাষার প্রতি মর্যাদা জানিয়ে ২১ ফেব্রুয়ারি বাংলা ডোমেইন ডটবাংলার উদ্বোধন হচ্ছে।

কিন্তু ফ্রেরুয়ারি যায় ডটবাংলা চালু হয় না। কারণ ঝুলে আছে অনুমোদন। চলছিল নানা চেষ্টা তদবির।

৭ জুন যুক্তরাষ্ট্রের কমার্স সেক্রেটারিকে চিঠি লেখেন তারানা হালিম। চিঠিতে আইক্যানে ডটবাংলার অনুমোদনে প্রয়োজনীয় আবেদনে করা হয়েছে কথা উল্লেখ তিনি লিখেছেন, ‘আন্তজার্তিক মাতৃভাষার প্রতি শ্রদ্ধা ও আবেগের স্থান হতে ২০১৬ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ডটবাংলা চালুর ঘোষণা দিয়েছিলাম।’

এতে ডটবাংলার জন্য রুট-জোন ডেলিগেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে সহযোগিতা করার জন্য কমার্স সেক্রেটারিকে অনুরোধ জানান প্রতিমন্ত্রী।

অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ, ২০১৬ সাল। শ্রীলংকার কলম্বোয় চলছিল এপনিকের সম্মেলন। সেখানে অংশ নিতে ছিলেন ইন্টারনেট যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও বিডিনগ বোর্ড অব ট্রাস্টির চেয়ারম্যান সুমন আহমেদ সাবির।

ডটবাংলার চূড়ান্ত অনুমোদনের আগে জট ছোটানোর নায়কদের মধ্যে তিনি একজন। এই ইন্টারনেট বিশেষজ্ঞ এপিনিকের সম্মেলনে আইক্যানের যে টেকনিক্যাল বডির প্রতিনিধিরা এসেছিলেন তাদের সঙ্গে বিডিনগ ও এপনিকের সংঙ্গে যুক্ত বাংলাদেশীদের নিয়ে বৈঠক করেন। বৈঠকে টেকনিক্যাল কিছু বিষয় উঠে আসে যার জন্য বিষয়টি আটকে ছিল।

আইক্যান তখন স্বাধীন। যুক্তরাষ্ট্রের কমার্স হতে এটি মুক্তি পেয়েছে তার ক’দিন আগেই। ফলে এটি ইউএস কমার্সের অধীনে ছিল না আর। তা নিয়ন্ত্রণ করছিল ইন্টারনেট কমিউনিটি।

আইক্যানের সঙ্গে বৈঠকে তারা সমস্যা চিহ্নিত করে বিটিসিএলের সঙ্গে কথা বলেন। সমস্যাগুলো ঠিক করতে পরামর্শ দেন। বিটিসিএল তা ঠিক করার পর আসে সেই কাঙ্খিত ক্ষণ, মেলে অনুমোদন।

৫ অক্টোরব সন্ধ্যায় টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম ফেইসবুক স্ট্যাটাসে জানান, ‘অবশেষে ‘ডট বাংলা ডোমেইন’ বাংলাদেশের অনুকূলে অনুমোদিত! প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আরেকটি কাজ সম্পন্ন হলো। অনেক চেষ্টার পর ‘ডট বাংলা ডোমেইন’ বাংলাদেশের অনুকূলে আইক্যান কর্তৃক বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে।’

ডটবাংলা চালুর জন্য সবার ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ছিল জানিয়ে ১৮ অক্টোবর সংবাদ সম্মেলনে তারানা হালিম বলেন, দেশের সরকার প্রধান থেকে শুরু করে সবার প্রচেষ্টাতেই ডটবাংলা ডোমেইন বাংলাদেশ পেয়েছে।

‘এই ডটবাংলার জন্য আরও দুটি দেশ ইন্টারনেট করপোরেশন ফর অ্যাসাইন্ড নেইমস অ্যান্ড নাম্বারস বা আইক্যান এর কাছে আবেদন করেছিলো। কিন্তু বাংলাদেশ বাংলা ভাষাকে পেয়েছে অনেক রক্তের বিনিময়ে। তাই শেষ পর্যন্ত আইক্যান বাংলাদেশকে ডটবাংলা দিয়েছে।’

এরপর ১৬ ডিসেম্বর এটি উদ্বোধনের ঘোষণা দেন থাকলেও তা আর হয়ে উঠেনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৩১ ডিসেম্বর এটি উদ্বোধন করলেন।

ইন্টারনেটে বাংলার জন্য সংগ্রাম শুরু হয়েছিল ২০১০ সালে। ওই বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডট বাংলার জন্য আইক্যানে অনলাইনে আবেদন করেন।

বাংলাদেশের আবেদনের পর সংস্থাটি বাংলা ভাষাকে মূল্যায়ন করে। ২০১১ সালে ইন্টারন্যাশনালাইজড ডোমেইন নেইমে (আইডিএন) লেখার ভাষা হিসেবে বাংলা ভাষার আনুষ্ঠানিক অনুমোদন পায় বাংলাদেশ। এরপর ইন্টারনেট অ্যাসাইনড নাম্বারস অথোরিটির (আইএএনএ) অনুমোদনও মেলে।

source

: , , , ,

Facebook Fan Page

Recent Posts